Modest Collection
Total cost {{grandtotal | currency:rate:symbol}}
{{x.productName}}
Empty Shopping CartPlease Add product
আমার প্রথম সন্তানের যখন জন্ম হয়, আমি কত কিছু ভেবে রেখেছিলাম ওকে দেখে
আমার কত আনন্দ হবে, কিভাবে ওকে যত্ন নেব, কি কি করব ওকে নিয়ে… কিন্তু যখন
পোস্ট অপ এ জ্ঞাণ ফিরে ওকে দেখতে পেলাম, তেমন আনন্দ হলনা। শরীর জুড়ে অসহ্য
ব্যাথা, পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছে, কাশি আসছে আর কাটা জায়গায় ব্যাথা। কোনমতে
তিন দিন পার করে বাসায় ফেরার পর হল পোস্ট পার্টাম এক্ল্যাম্পসিয়া।
অসুস্থতার চূড়ান্ত অবস্থা যাকে বলে। বাড়িভর্তি লোক, আমার যত্নের
ত্রুটি হচ্ছেনা, কিন্তু হঠাত করে লাইফস্টাইলের এই আমূল পরিবর্তনটা আমি মেনে
নিতে পারছিনা। বাচ্চা হওয়ার আনন্দে বাচ্চার বাবা আমার সব আত্মীয় এবং
শশুড়বাড়ির আত্মীয়দের শাড়ি গিফট করল, একমাত্র আমি ছাড়া। সবাই নতুন শাড়ি পড়ে
বাচ্চা কোলে নিয়ে ছবি তুলছে, কত আনন্দিত সবাই, আর আমি এসব দেখে আরো হতাশ
হয়ে যাচ্ছি। মনে হচ্ছিল আমার জীবন এখানেই শেষ, এভাবেই অসুস্থ, নির্ঘুম রাত
কাটাতে হবে বাকিটা জীবন। বাচ্চাকে দেখে মনে হচ্ছে, ও না হলেই ভাল হত। আবার
এরকম অনুভূতির জন্য অপরাধবোধেও ভুগছি; এ কেমন মা আমি! অন্যরা শুনলে কি
ভাববে! সে এক ভয়াবহ অবস্থা।
ডিপ্রেশন টা মারাত্মক পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। মরে যেতে ইচ্ছে হত। এক দৃষ্টিতে কোন দিকে তাকিয়ে থাকতাম, বাচ্চাকে সহ্য হতোনা।
আমাদের দেশে এই এক সমস্যা। আপনি আপনার কষ্টের কথা সহজে শেয়ার করতে
পারবেন না যদি আপনার চারপাশের মানুষগুলো যথেষ্ট পরিমান বুঝদার না হয়। কিছু
কমেন্ট শুনতে হতে পারে এমন, “আমরা কি আর বাচ্চা পালিনি?” “কি জানি বাবা, এ
কেমন মা”, “এখন শুধু বাচ্চার কথা ভাবতে হবে।’ আরো কত কি। বাচ্চা হবার পর মা
ছাড়া বাকি সবাই সেই বাচ্চার ‘ভাল’ টা বেশি বোঝেন। সেইসাথে উদ্ভট নানা
উপদেশ, এটা খেয়োনা, বাচ্চার এই হবে, বাচ্চাকে পানি খাওয়াচ্ছ না? আর যদি
বাচ্চার কোন সমস্যা হয় তাহলে তো কথাই নেই, অবধারিতভাবে সব দোষ মায়ের। আমি
মনে করি, বাচ্চা হবার আগে প্রিপারেশন হিসেবে বাচ্চার কাথা বালিশ কেনার
থেকেও জরুরী হল প্রসব পরবর্তী পরিস্থিতি কি হতে পারে সেটা হজম করার মত
প্রস্তুতি রাখা। এটা কারোরই থাকেনা। আর বাচ্চা হবার পর মায়ের মনের অবস্থা
এতটাই বিধ্বস্ত থাকে যে, সামান্য নেগেটিভ কথাও অনেক বেশি কষ্ট দেয়।
সবাই আপনাকে বুঝবে এমন আশা করাটাই তো বোকামি। আমি কি অন্যকে বুঝি?
আল্লাহ ছাড়া তো আর কেউ বোঝেন না আমরা আসলে কোন অবস্থায় আছি। তাই মন কে শক্ত
করাটা দরকার। নিজেকে সামলাতে হবে সবার আগে।
আলহামদুলিল্লাহ, দু একদিন পরই এক ডাক্তার ভাবি আমাকে দেখতে এসে পোস্ট
পার্টাম ডিপ্রেশন নিয়ে আলোচনা করেন। সেটা জানার পর আমার অনেক উপকার হয়েছিল।
আমি একাই না, অনেকেরই হয় এমন, এটা জানার পর অপরাধবোধটা চলে গিয়েছিল।
ডিপ্রেশন টা পুরোপুরি কেটে গিয়েছিল আরো কিছুদিন পর যখন আমার রেজাল্ট পাবলিশ
হয়। অনেকদিন পর আমি নিজেকে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বেবি একটু বড় হলেই
আমি আবার পড়তে যাব, বাইরে যেতে পারব, আস্তে আস্তে সব আবার আগের মত হয়ে
যাবে।
পরের বাচ্চা হবার আগে এই পরিস্থিতি হতে পারে এবং এটা আমাকে জয় করতে হবে,
এ ব্যাপারে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম বলে আলহামদুলিল্লাহ পরেরবার আর এমন
হয়নি।
আমার যখনই সেই সময়গুলোর কথা মনে পড়ে, প্রচন্ড রকমের খারাপ লাগে।
বাচ্চাটার জীবনের প্রথম দিনগুলোতে আমি ওকে ভালবাসিনি, এটা ভাবলেই মাথা কাজ
করেনা। চাইনা কোন মায়ের এমন টা হোক। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যেটুকু বুঝেছি-
সাপোর্টিভ হাজব্যান্ড এই পরিস্থিতিতে খুবই জরুরী। যাদের নেই, তাদের জন্য
এই স্ট্রাগল টা কঠিন।আমাদের দেশে বাচ্চা হলেই মেয়েরা চলে যায় বাবার বাড়ি।
সব কষ্ট মেয়ে আর আর পরিবার সামলায়, আর বাচ্চার বাবা দিব্যি আরামে থাকে।
বাচ্চা হবার সময় থেকে সব সময় হাজব্যান্ড সাথে থাকলে, দায়িত্ব নিলে এই কষ্ট
অনেকটাই কমে যায়।
দিনের কিছুটা সময়, হোক সেটা দশ মিনিট, “me time” টা জরুরী। বাচ্চা যখন
ঘুমিয়ে থাকবে, তখন কিছুটা সময় শুধুমাত্র নিজের জন্য বের করে নিয়ে পছন্দের
কোন কাজ করা, যেমন চা হাতে নিয়ে ম্যাগাজিন পড়া, বা নিজের শখের মধ্যে
সহজসাধ্য কিছু।
অন্য নতুন মায়েদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। আপনি একাই না, আরো অনেকে এই
অবস্থায় আছেন, সেটার একটা আড্ডা হলে শক্ত পরিস্থিতি সামলানোর প্রেরণা
জাগে।
নেগেটিভ কথা আর আলগা উপদেশগুলো এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে জাস্ট অন্য কান দিয়ে
বের করে দেয়া। উপদেশ অবশ্যই শুনবেন, তারমধ্যে যেটা পছন্দ হয় সেটা পালন
করলেন। বাচ্চার মা আপনি, আপনি বাচ্চার জন্য ভালটাই বুঝবেন অন্যদের
চেয়ে।এসবের পরেও যদি খারাপ লাগা না কমে, মনে হয় ডিপ্রেশনের মাঝে ডুবে
যাচ্ছেন, অবশ্যই বিলম্ব না করে প্রফেশনাল কাউন্সেলরের কাছে যাওয়াটা
রেকমেন্ড করছি।
সূরাহ ইনশিরাহের সেই আয়াতগুলো বারবার আওড়াবেন মনে মনে, “নিশ্চয়ই কষ্টের পরে স্বস্তি রয়েছে। অবশ্যই কষ্টের পরে স্বস্তি আছে” (৫,৬)
যারা বেবি দেখতে যাবেন, মায়ের জন্য ছোট্ট হলেও কোন গিফট নেবেন। এমনকি
একটা চকলেট কিংবা ‘You are doing great, mommy’ লেখা চিরকুটও মায়েদের মন
ভাল করে দেবার জন্য যথেষ্ট।
প্যারেন্টিং কঠিন, এবং এর পুরস্কারও বড়। সকল মায়ের জন্য এই যাত্রা মসৃন
তো হবেনা, কিন্তু কঠিন এই জার্নি পার হবার মনোবল যেন আল্লাহ দিন সেই
কামনায়,
« Previous
Next »
{{x.min_price | currencyWithout:rate}} -{{x.max_price | currencyWithout:rate}}BDT
{{x.price | currencyWithout:rate}} BDT {{x.discountPrice=x.after_discount | currencyWithout:rate}} BDT